নতুনের খোঁজে-নতুন দিগন্তে
দীর্ঘ ত্রিপদী
ঠাকুরের বাণী শুনি, নৈষ্ঠিকের শিরোমণি,
বীররাগে করি বীরদাপ।
রাম রাম রাম বলে, ভেসেছে নয়ন জলে,
অগাধ সলিলে দিল ঝাঁপ।।
যবে পদ দিল জলে, মৃত্তিকা ঠেকিল তলে,
পদতরী হ’ল ভাসমান।
বিমানে উড়িতে পারে, ডুবেনা অগাধ নীরে,
পূর্বরূপ হইল শক্তিমান।।
পূর্বে বেদভিটা যেটা, নামজাদে বেদভিটা,
তারাচাঁদ মালু দুটি ভাই।
প্রভুদের নিজ জ্ঞাতি, সেখানে করে বসতি,
ভাই ভাই সম্পর্ক সবাই।।
জলে হ’ল ভাসমান, মনে করে অনুমান,
জাহিরীতে নাহি প্রয়োজন।
জপ জপ শব্দ করে, চলেছে অগাধ নীরে,
লোক এলে করে সন্তরণ।।
কভু পদতল জল, কভু হয় কটি জল,
কখন বা হয় জানু জল।
জলে চলে মহাভাগ, বুকে ছিল জলদাগ,
জন্মদেশে বিখ্যাত সকল।।
হরে রাম হরে রাম, জয় রাম সীতা রাম,
অবিরাম গায় নাম গীত।
বেদভিটা সেই বাটী, প্রভু জ্ঞাতি ভাই দুটি,
সে বাটীতে হ’ল উপনীত।।
ব্রাহ্ম মুহূর্ত সময়, তারাচাঁদ বের হয়,
দাদা বলি মালুকে ডাকিল।
জপ জপ করি নীরে, হরিনাম জপ করে,
বাড়ীপরে কে যেন উঠিল।।
হীরামনে গিয়া ধরে, দু’ভাই সুধায় তারে,
বলে কেরে তুই মহাবল।
বল দেখি মন খুলে, আজ এই রাত্রিকালে,
কি কারণে আলি তাহা বল।।
হীরামনে কহে কথা, কি কব মম বারতা,
শুন খুল্লতাত তারাচাঁদ।
অঞ্জনা আমার মাতা, বানর কিশোরী পিতা,
প্রাণদাতা বাবা হরিচাঁদ।।
রামদাস বায়ু পুত্র, মহারাজ বালা ক্ষেত্র,
অনুচর সুগ্রীব রাজার।
হিয়া নাহি হয় ধৈর্য, জ্ঞান নাহি অন্তর্বাহ্য,
ত্যজ্য আর্য চৈতন্য বালার।।
কি বলিতে কিবা বলি, বুঝিতে নারি সকলি,
না জানি জলে কি স্থলে যাই।
হরিচাঁদ রূপরসে, দেহ তরী ডুবে ভাসে,
ভাটি খেলি আবার উজাই।।
হরিচাঁদ ইচ্ছাময়, সকলি তাঁর ইচ্ছায়,
না জানি কি ইচ্ছা তাঁর মনে।
সেই ভ্রমাইলে ভ্রমি, দেখিতে জনম ভূমি,
স্ব-নৌকায় চলেছি দক্ষিণে।।
ঘাসকাটা নায় চড়ি, যাব বালাদের বাড়ী,
দিন কত আসা যাওয়া সার।
ইচ্ছিল শ্রীহরিচাঁদ, করিতে পতিত আবাদ,
বালাবাড়ী বাড়ীও খামার।।
তারাচাঁদ মালুরাম, বলে বাছা চিনিলাম,
তোরে ল’য়ে হ’ল হুড়াহুড়ি।
তুই ছিলি মরা শব, জুটিয়া বালারা সব,
তোরে ফেলে যায় অই বাড়ী।।
শব ছিলি এই রাত্রে, প্রাণপ্রাপ্ত এইমাত্রে,
এ মাহাত্ম্য সে মেঝ দাদার।
প্রতিষ্ঠা বাড়িবে বলে, তোরে ভাসা’য়েছে জলে,
মনে তোর রাম অবতার।।
হরিচাঁদ রূপনীরে, বাছাধন সে পাথারে,
একেবারে দিয়াছিল ঝাঁপ।
যাহা কহ তাহা ঠিক, শুনিতে যেন বিদিক,
রামলীলা ভাবের প্রলাপ।।
দণ্ডেক নিশি থাকিতে, হীরামন তথা হ’তে,
গৃহে যায় এক নায় উঠে।
মল্লকাঁদি গ্রামে এসে, খালকূলে নেমে শেষে,
রাউৎখামার যায় হেটে।।
হীরামনে দরশনে, সকলে আশ্চর্যগণে,
হইল হৃদয় প্রফুল্লিত।
রামাগণে বামাস্বরে, হুলুধ্বনি সবে করে,
জ্ঞাতি বন্ধু সবে পুলকিত।।
হীরামন প্রাণ পান, ব্যাধিমুক্ত দেশে যান,
শ্রীহরি চরিত্র সুধাধার।
এ দুস্তার ভবার্ণবে, হরি তরী কর সবে,
কহে দীন রায় সরকার।।