নতুনের খোঁজে-নতুন দিগন্তে
পুনঃ প্রেম প্রচারিতে হইল মনন।
সে কারণ হ’ল যশোমন্তের নন্দন।।
যদি বল গৌরাঙ্গের প্রেম তুচ্ছ নয়।
সে প্রেম শোষিবে কেন কলির মায়ায়।।
তার সাক্ষী ভাগবতে আছয় প্রমাণ।
রাজা পরীক্ষিত স্নান করিবারে যান।।
বৃষরূপে ছিল ধর্ম দাড়িয়া তখন।
মুদ্গর লইয়া কলি ভেঙ্গেছে চরণ।।
হেনকালে বসুমতি সুরভীরূপেতে।
কেঁদে কেঁদে কহে ডেকে রাজা পরীক্ষিতে।।
অই কলি অই ধর্ম এই আমি ক্ষিতি।
রক্ষা কর বিপদে ধার্মিক নরপতি।।
কলিকে ধরিয়া রাজা চাহিল কাটীতে।
শরণ লইল কলি প্রাণের ভয়েতে।।
রাজা বলে না রহিবি মম অধিকারে।
চারিস্থান চাহি নিল কলি পরিহারে।।
স্বর্ণকার দোকান অপর বেশ্যালয়।
সুরাপান জীবহত্যা যে যে খানে হয়।।
চারিঠাঁই পেয়ে কলি পাইল আহ্লাদ।
ভাবে সর্ব ঠাঁই হ’ল আমার প্রসাদ।।
বেশ্যালয় যায় কেহ করে সুরা পান।
যদি কোন মহাজন সে পথে না যান।।
ব্যাসের কলম সাক্ষী বেশ্যা বলি কারে।
পঞ্চ সঙ্গ করে নারী বেশ্যা বলি তারে।।
অনেকেই জীব হত্যা করেছে সদায়।
মৎস্য মৃগ পক্ষী সেকি জীব মধ্যে নয়।।
ধনবান হ’লে যাবে স্বর্ণকার ঠাঁই।
দোকান স্পর্শিলে কলি তাহা কই এড়াই।।
ইহাতেও কেহ যদি না ভুলে মায়ায়।
রসিকের ধর্ম দিয়া অনেকে মজায়।।
তার সাক্ষী শ্রীগৌরাঙ্গ ধর্ম যবে দিল।
চিত্রগুপ্ত ত্রস্তচিত্তে খাতা ফেলাইল।।
মৌন হ’য়ে বসিলেন যম মহাশয়।
কাম ক্রোধ ষড়রিপু হইল উদয়।।
যার যার প্রাদুর্ভাব জানাইল তাই।
সবে কহে যমঅধিকার যায় নাই।।
সে সব লিখিতে গেলে পুথি বেড়ে যায়।
সংক্ষেপে লিখিব কিছু শাস্ত্রে যাহা কয়।।
কাম বলে যমরাজ চিন্তা কই তোমার।
আমি ভরি দিব তব দক্ষিণের দ্বার।।
শ্লোক
কা চিন্তা ভো মৃত্যুপতে অহং প্রকৃতি ভবান্।
শোষিতং শোষিতং প্রেম চৈতন্যং কিং করিষ্যতি।।
পয়ার
শোষিব শোষিব প্রেম প্রকৃতি হইয়া।
কি করিতে পারে একা চৈতন্য আসিয়া।।
বলে কলি শুন বলি ধর্ম নরমণি।
আমি দিব গৌরাঙ্গের সব ভক্ত আনি।।
ধরিব বৈরাগ্য বেশ মুখে রেখে দাড়ি।
ভেকধারী সাধু হ’য়ে ফিরিব বাড়ী বাড়ী।।
চৈতন্যের তত্ত্ব যাতে কেহ নাহি মানে।
শিখাইব এই তত্ত্ব সুযুক্তি বিধানে।।
যম কলি প্রভাব এ গ্রন্থ বিরচিত।
জীব গোঁসাই সেই গ্রন্থ গোস্বামী লিখিত।।
নানা মত করি কলি জীব ভুলাইল।
শাস্ত্র ছাড়া মত কত কলি দেখাইল।।
মাতা পিতা না মানে না মানে গুরুজন।
নারী বাধ্য পিতা করে পুত্রে বিসর্জন।।
আর দেখ গৌরাঙ্গের মত যত ছিল।
তাহার মধ্যেতে কলি কত মত দিল।।
গৌরাঙ্গের মত প্রায় লোপ হয়ে যায়।
নরোত্তম শ্রীনিবাস এসে এ সময়।।
দুই প্রভু শেষ লীলা করিল উজ্জ্বল।
মধুর মাধুর্য প্রেম প্রকাশি সকল।।
আবার হইল লোপ কলির মায়ায়।
গোস্বামীর ধর্ম বলি বিপথ লওয়ায়।।
প্রকৃতি হইয়া প্রেম করিল শোষণ।
চমকিত হইল যত সাধকের গণ।।
বীরভদ্র প্রিয় শিষ্য চারিজন ছিল।
প্রতিজ্ঞা করিয়া তারা কহিতে লাগিল।।
যথাকার বিন্দু মোরা তথায় পাঠাব।
প্রকৃতির স্থানে বিন্দু কিছু না রাখিব।।
বনচারী অখিলচাঁদ সেবা কমলিনী।
হরিগুরু এই চারি সম্প্রদায় জানি।।
পূর্ব পূর্ব মহাজন যে ধর্ম যাজিল।
বীরভদ্র সেই ধর্ম শিষ্যে জানাইল।।
প্রকৃতি আশ্রয় করি সিদ্ধিপ্রাপ্ত হ’ল।
সে কারণ চারিজন প্রতিজ্ঞা করিল।।
আধুনিক সেই ধর্ম শুনিয়া শ্রবণে।
প্রকৃতি আশ্রয় লোভে শিক্ষাগুরু জানে।।
গৃহধর্ম ত্যাগ করি পচা গৃহী হয়।
করয় প্রকৃতি সঙ্গ ধর্ম নাহি রয়।।
বুঝিতে না পারে ধর্ম করে নারীসঙ্গ।
হাতে তালি দেয় কলি দেখিয়া সে রঙ্গ।।
বিধবা হইল কোন যুবতী রমণী।
গর্ভবতী হ’লে তারে ভেক দেয় আনি।।
পচাগৃহী শিষ্য করি রাখে যে তাহারে।
সেই গর্ভে পুত্র হ’লে সেবাইত করে।।
জাতিতে বৈরাগী তার হয় পরিচয়।
করতালী দেয় কলি দেখিয়া তাহায়।।
শ্রীগৌরাঙ্গ প্রভু যবে প্রেম প্রচারিল।
সভক্তি দুর্লভ প্রেম জীবে শিক্ষা দিল।।
চরিং চিরাৎ যেই প্রেম ছিল অনর্পিত।
বিরিঞ্চি বাঞ্ছিত প্রেম নামের সহিত।।
বিলাইল সেই প্রেম নামরসে মাখা।
তাহা দেখি চিত্রগুপ্ত ছেড়ে দিল লেখা।।
যমরাজ ছাড়ে ধর্মাধর্মের বিচার।
অবসর হ’য়ে কহে গেছে অধিকার।।
তাহা শুনি কলিরাজ ছয় রিপু লয়ে।
যম চিত্রগুপ্ত স্থানে উত্তরিল গিয়ে।।
কলিরাজ ডাকে মহামায়াকে স্মরিয়া।
মহামায়া এল কলি সাপক্ষ হইয়া।।
কলি কহে ধর্মরাজ কেন অবসর।
চিত্রগুপ্ত লেখা ছাড়ে কেমন বর্বর।।
চিত্রগুপ্ত বলে খাতা রাখিব কি জন্য।
লেখা পড়া দু’টা মোর পাপ আর পুণ্য।।
পাপ গেল পুণ্য গেল লেখা গেল মোর।
এবে কি লিখিব যা বিধির অগোচর।।
যম কহে অধিকার গিয়াছে আমার।
পাপ পুণ্য শুন্য কার করিব বিচার।।
কলি কহে মম অধিকার যদি রয়।
তোমার এ অধিকার থাকিবে নিশ্চয়।।
লোভ কহে আমি লোভাইব সব সাধু।
প্রেমমধ্যে দেখাইব নারী মুখবিধু।।
এককালে লোভাইব বৈরাগী সকল।
পঞ্চ রসিকের ক্রিয়া দিয়া নারী কোল।।
গৌরাঙ্গের সঙ্গে হরি কীর্তন ভিতরে।
নারী আর পুরুষ মাতাব একেবারে।।
দুইরূপ বৈরাগীরা গৌড়িয়া বাতুল।
জাতি ল’য়ে দলাদলী ভুলাইব মূল।।
মদ কহে মাৎসর্য্য জন্মাব দম্ভসহ।
নামে প্রেমে মন মজা’তে নারিবে কেহ।।
কাম কহে বৈস গিয়া তব রাজপাটে।
তব অধিকার দিব প্রেম নিব লুঠে।।
মহাজনী পথ বলি দেখাইব পথ।
চৈতন্যের মত ভুলি ডুবিবেক সৎ।।
শিবের চৌষট্টি নিশা দ্বাদশ পাগল।
ইহাদিগে লইয়া বলা’ব হরিবোল।।
পরাৎপর ব্রজরস প্রভু নিজ ধর্ম।
বেদাতীত গূঢ়ত্ব যা বিধির অগম্য।।
তাহা দেখাইয়া ভুলাইব কতগুলি।
নারী লুব্ধ করাইব মজা’ব সকলি।।
শ্রীনিবাস চৈতন্যের মত গোড়াইব।
তার মধ্যে অন্য অন্য মত চালাইব।।
সেই মত মাতাইব সকল জগৎ।
চৈতন্যের মত ছাড়ি ডুবিবেক সৎ।।
সংঘট ঘটাব মঙ্গল আর শনিবারে।
বার বার ‘বার’ বানাইব বারে বারে।।
বিল্ববৃক্ষ তুলসী মাহাত্ম্য লোপাইব।
হিজলিকা শড়াজিকা বার সাজাইব।।
চৈতন্যের মত বারে করিব আসক্ত।
মজাইব চৈতন্যের আত্মসুখী ভক্ত।।
মাধুর্য্যের ভক্তে মোর নাই অধিকার।
ঐশ্বর্য্য ভক্তের ভক্তে দিব ছারখার।।
রোগাভক্তি করাইয়া মাতাইব সব।
এদিকেতে করিব রোগের প্রাদুর্ভাব।।
মত প্রচারিয়া মোর মতে আকর্ষিয়া।
তোমার দক্ষিণ দ্বার দিব পোষাইয়া।।
হ্রদে দহে তড়াগে প্রয়াগ প্রচারিব।
কূপে গঙ্গা প্রচারিয়া তীর্থ বানাইব।।
কুলজার কুলাচার ধর্ম নষ্টাইব।
বিধিভক্ত নৈষ্ঠিকের ধর্ম ভ্রষ্টাইব।।
প্রচারি পৈশাচী সিদ্ধি সাধুত্ব জানা’ব।
ভূতভাবী বর্তমান তাহারে বলা’ব।।
কন্দর্পের দর্পে মোহাইব কতজন।
কিয়ৎক্ষণ মোহাইব মোহান্তের মন।।
কৃষ্ণভক্তি ছাড়ি পৈশাচিক মত ল’বে।
এতে তব অধিকার ক্রমেই বাড়িবে।।
তাহা শুনি যম বলে ধন্য ধন্য কলি।
যমদূত সবে নাচে দুই বাহু তুলি।।
কলি বলে ভক্ত মধ্যে বহুত পাষণ্ড।
বহিরঙ্গ ভক্ত যত সব হ’বে ভণ্ড।।
কূপজলে দেখা’ব আশ্চর্য্য বিভীষিকা।
লোক সংঘটন হবে নাহি লেখাজোখা।।
নদী পার নিব নাবিকের নায় নিয়া।
নাবিক ছাড়িবে কর্ণ অসাধ্য হইয়া।।
গোছাল রুধির ক্লেদ টিপ্পনী তরণী।
মুচির নৌকায় পার হইবে ব্রাহ্মণী।।
হাড়ি মুচি যবন ব্রাহ্মণ আদি করি।
যাতায়াতে ফেলাইব পথ রুদ্ধ করি।।
শ্রাদ্ধোৎসর্গ তণ্ডুল পরশে প্রেম শূন্য।
অজালোম পরশনে ভক্তি হয় চূর্ণ।।
অজারক্ত খাওয়াইব কূপজলে ধুয়ে।
যাজনিক ব্রাহ্মণেরে দোকানী বানায়ে।।
তাহার মিষ্টান্ন খাওয়াইব বাজারেতে।
যাতে ভক্তি লোপ হয় তব কল্যাণেতে।।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে রয়েছে নিশানা।
পাপপূর্ণা বসুন্ধরা শস্য জন্মিবে না।।
গাভী হবে দুগ্ধহীনা ফলহীন বৃক্ষ।
নদী-নদ খাল বিল ক্রমে হ’বে শুষ্ক।।
মারুতির ক্রোধ ছিল তাহা কোথা যাবে।
সেই শাপ মনস্তাপ অবশ্য ভূঞ্জিবে।।
মাতৃ পিতৃ ভাতৃ ভাত খাইবে যাচিয়া।
নরকে মজিবে ধর্ম পালিতে নারিয়া।।
রাবণের চেড়ি করে সীতাকে পীড়ন।
তাহা দেখি কুপিলেন পবননন্দন।।
সেইকালে আছাড়িয়া লইত জীবন।
তাহা না করিল শুনি সীতার বারণ।।
জন্মান্তরে তাহারা হইবে রোগযুক্ত।
তাহারা হইবে সব কূপতীর্থ ভক্ত।।
সধবা বিধবা সব ডুবা’বে সে কূপে।
এই দশা হ’বে হনুমান বীর কোপে।।
নৈষ্ঠিক প্রেমিক ভক্ত পদ শিরে ধরি।
গৌরাঙ্গের হাটে গিয়া বলা’ব হরি হরি।।
না মানিবে শিব দুর্গা কৃষ্ণপ্রেমে বাম।
হরিনাম না লইবে বলি মরা নাম।।
এরূপ দুষ্কৃতি কর্মে ধর্ম কর্ম ক্ষয়।
বিস্তারি লিখিতে গেলে পুথি বেড়ে যায়।।
এরূপে বৈষ্ণবধর্মে পড়ে গেল ত্রুটি।
সেহেতু ঘুচাতে বৈষ্ণবের কুটিনাটি।।
যুগে যুগে করে প্রভু ভূভার হরণ।
দুষ্কৃতি বিনাশ আর ধর্ম সংস্থাপন।।
ব্যাসের কলমে আছে ভাগবতে শ্লোক।
স্বয়ং এর মুখ বাক্য প্রতিজ্ঞাপূর্বক।।
শ্লোক
পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।।
পয়ার
বৈষ্ণবের কুটিনাটি খণ্ডন কারণ।
সে কারণে অবতার পুনঃ প্রয়োজন।।
দ্বাপরেতে যদুবংশ অনেক হইল।
নিজ বংশ ধ্বংস বাঞ্ছা কেন বা করিল।।
আপনি এলেন ভার হরণ করিতে।
ভাবিলেন আরো ভার হ’ল আমা হ’তে।।
যদি বল তারা সতী গান্ধারীর শাপ।
শ্রীকৃষ্ণ ভাবিল কেন মম বংশ পাপ।।
আপনি রাখিতে হরি ব্রাহ্মণের মান্য।
হৃদয় ধরিল ভৃগুমুনি পদচিহ্ন।।
যুধিষ্ঠির রাজসূয় যজ্ঞের সময়।
স্বহস্তে ব্রাহ্মণপদ শ্রীকৃষ্ণ ধোয়ায়।।
দুর্বৃত্ত যদু বালক কারে নাহি মানে।
অহংকারে মত্ত হ’য়ে না মানে ব্রাহ্মণে।।
শাম্বের পেটেতে কেন মুষল বাঁধিল।
কপালে সিন্দূর দিয়া শাড়ী পরাইল।।
পথমধ্যে বসাইল নারী সাজাইয়া।
দুর্বাসাকে কহে সবে কপট করিয়া।।
কহ মুনি এই গর্ভে হবে কি সন্তান।
দ্বিজে উপহাস করে এমন অজ্ঞান।।
কৃষ্ণ যারে মানে এরা করে অপমান।
প্রকারেতে অপমান হন ভগবান।।
ইচ্ছা ক’রে ইচ্ছাময় নাশিবারে বংশ।
দুর্বাসা মুনির শাপে যদুকুল ধ্বংস।।
নিম্ববৃক্ষে কৃষ্ণ মরে মারিল অঙ্গদ।
সে তারা সতীর শাপ এই স্থলে শোধ।।
গান্ধারীর শাপে যদি যদুবংশ ক্ষয়।
তবে কেন যদুবংশে বজ্রবীর রয়।।
যদি বল দুর্বাসার শাপে হয় ক্ষয়।
ইচ্ছাময়ের ধ্বংস ইচ্ছা এর অগ্রে হয়।।
দেখিতে দেখার আছে অনেক দ্রষ্টব্য।
মূলে ভূভার হরণ মারণ সুসভ্য।।
তিন যুগে পাষণ্ডীর মস্তক ছেদন।
কলিতে পাষণ্ডী সব নামাস্ত্রে দলন।।
ধন্য ধন্য অবতীর্ণ চৈতন্য নিতাই।
নাম দিয়া উদ্ধারিল জগাই মাধাই।।
সেই নাম প্রেমমধ্যে কলি প্রবেশিল।
প্রকৃতির স্থানে বিন্দু প্লাবিত হইল।।
এইসব কুটিনাটি খণ্ডন কারণ।
জীব উদ্ধারের জন্য হইল মনন।।
সে কারণ অবতার হৈল প্রয়োজন।
সফলা নগরী যশোমন্তের নন্দন।।
সুযুক্তি বিধানে প্রভু অবতীর্ণ হ’ল।
হরিদাস নামে যত ভক্তে শিক্ষা দিল।।
করিবে গৃহস্থধর্ম ল’য়ে নিজ নারী।
গৃহে থেকে ন্যাসী বাণপ্রস্থী ব্রহ্মচারী।।
ঋতুরক্ষা করিবেক জীবহত্যা ভয়।
কেহ বা পূর্ণ সন্ন্যাসী নিষ্কাম আশ্রয়।।
গৃহধর্ম গৃহকর্ম করিবে সফল।
হাতে কাম মুখে নাম ভক্তিই প্রবল।।
পরনারী মাতৃতুল্য মিথ্যা নাহি কবে।
পর দুঃখে দুঃখী সচ্চরিত্র সদা রবে।।
অদীক্ষিত না করিবে তীর্থ পর্যটন।
মুক্তি স্পৃহা শূন্য নাই সাধন ভজন।।
এই ভাবে করিবেন জীবের উদ্ধার।
একারণ হৈল যশোমন্তের কুমার।।
কৃষ্ণের প্রতিজ্ঞা ভাগবতের বচন।
যুগে যুগে করিবেন ভূভার হরণ।।
সে কারণ-অবতার হৈল প্রয়োজন।
অবনীতে অবতীর্ণ পূর্ণব্রহ্ম হন।।
অগ্রে পাতকীর শিরোচ্ছেদ ধনু অস্ত্রে।
এ যুগেতে প্রেমদান হরিনাম মন্ত্রে।।
সব যুগে ভূভার হরিল নারায়ণ।
এব কৃষ্ণভক্ত আদি করিতে শোধন।।
কৃষ্ণভক্ত শৌচ আচরণ কুটিনাটি।
শুদ্ধ প্রেমভক্তি বৈষ্ণবেতে পড়ে ত্রুটি।
অনেক কারণে হ’ল এই অবতার।
জীবের উপায় শূন্য গতি নাহি আর।।
জীবোদ্ধার প্রেমদান প্রতিজ্ঞা পালন।
অন্নপূর্ণা শচী বাঞ্ছা করিতে পূরণ।।
নারদপুরাণে আছে নারদ সংবাদে।
নারদের কাছে হরি কহিলা আহ্লাদে।।
শ্লোক
কলৌ প্রথমসন্ধ্যায়াং লক্ষ্মীকান্তো ভবিষ্যসি।
সন্ন্যাসগৌরবিগ্রহে সান্ত্বয়ে পুরুষোত্তমে।।
পয়ার
শাস্ত্রগ্রন্থ ভাগবত করি সারোদ্ধার।
রচিল তারকচন্দ্র কবি সরকার।।