নতুনের খোঁজে-নতুন দিগন্তে
দীর্ঘ ত্রিপদী।
হরিকথা রসরঙ্গে, ভক্তগণ ল’য়ে সঙ্গে,
লীলা করে কৈশোর সময়।
কৈশোরের অবশেষ, যৌবন প্রথমাবেশ,
ঈশ্বরত্ব প্রকাশিত হয়।।
হরি পিতা যশোমন্ত, নরলীলা করি অন্ত,
শ্রীধাম গোলোকে চলে গেছে।
শেষে ঘটিল প্রমাদ, জমিদার সঙ্গে বাদ,
সে প্রস্তাব লেখা হইতেছে।।
যবে রামদিয়া যান, ব্রজনাথ সঙ্গে র’ন,
বিশ্বনাথ সঙ্গে বেড়ায়েছে।
নাটু এসে মিশে সঙ্গে, হরিনাম প্রেমরঙ্গে,
প্রেমানন্দে মত্ত হ’য়ে আছে।।
এইভাবে কত লীলা, রাখালের সঙ্গে খেলা,
একদিন নিভৃতে বসিয়া।
মুখে বলে হরিবোল, আসিয়া ব্রজ পাগল,
কহিতেছে কাঁদিয়া কাঁদিয়া।।
করি না সংসার কাজ, কহিতে বড়ই লাজ,
শুন প্রভু আমি বড় ভণ্ড।
আমি বড় অভাজন, মন্দ বলে গুরুজন,
ভাইসবে মোরে করে দণ্ড।।
প্রভু বলে তারা ভণ্ড, তোরে যারা করে দণ্ড,
তাহা আমি জানি ভাল মতে।
করেছে চপটাঘাত, আর করে মুষ্ট্যাঘাত,
সে আঘাত আমার অঙ্গেতে।।
শ্রীঅঙ্গেতে ছিন্ন ভিন্ন, আছে প্রহারের চিহ্ন,
ভক্তগণে করে অনুযোগ।
এ অঙ্গে করে প্রহার, সেই মুঢ় দুরাচার,
তার অঙ্গে হো’ক মহারোগ।।
মেরেছিল বড় ভাই, তিন দিন মধ্যে তাই,
ঘটিল যে তাহার কপালে।
মেরেছিল যে দিনেতে, সেই দিবস হইতে,
হস্ত তার উঠিয়াছে ফুলে।।
বিষম হস্ত বেদনা, মহাব্যাধির সূচনা,
গায় মুখে চাকা চাকা হ’ল।
কিছুদিনের পরেতে, গলিত হইল তা’তে,
ক্লেদ রক্ত বহিতে লাগিল।।
যেদিন বলদ বাঁচে, অনেকে তাহা জেনেছে,
পরস্পর জানাজানি হয়।
কেহ করিল বিশ্বাস, কেহ করে অবিশ্বাস,
কেহ এসে গরু দেখে যায়।।
লোকমুখে শুনি কথা, ব্রজনাথ জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা,
বলে ভাই ক্ষম অপরাধ।
ছোট ভাই বলে গণি, তোমাকে নাহিক চিনি,
দোষ করে ঘটিল প্রমাদ।।
ব্রজ বলে শুন ভাই, তব কিছু দোষ নাই,
কার কাজ কেবা যেন করে।
যার কাজ সেই করে, লোকে বলে লোকে করে,
যা করে শ্রীহরিচাঁদ করে।।
ক্ষমাকর্তা প্রেমকর্তা, রোগের আরোগ্য কর্তা,
কর্মকর্তা কর্ম অনুসারে।
কেটে যাবে কর্মভোগ, আরোগ্য হইবে রোগ,
পার যদি ধর গিয়া তারে।।
ঠাকুরের পদে পড়ি, ভূমে লুটে গড়াগড়ি,
শির কুটি’ বুকেতে কিলায়।
ক্ষমা কর অপরাধ, ওহে প্রভু হরিচাঁদ,
পতিত পাবন দয়াময়।।
বহু রোদনের পরে, হরিচাঁদ বলে তারে,
শোন যুক্তি মুক্তির বিধান।
ব্রজনাথ পদানত, হ’য়ে খা চরণামৃত,
কনিষ্ঠকে জ্যেষ্ঠ করি মান।।
যেইমাত্র করে তাই, আর তার ব্যাধি নাই,
সবে করে জয় জয় ধ্বনি।
রোগেতে হইয়া মুক্ত, সে’ হলো প্রভুর ভক্ত,
ব্যক্ত হ’ল অমনি অবনী।।
ত্যজিয়া গোলোকপুরী, ওঢ়াকাঁদি এল হরি,
অদ্বৈত গোলোক হুহুঙ্কারে।
সুকবি তারকচন্দ্র, বলে প্রভু হরিশচন্দ্র,
উর মম হৃদয় গহ্বরে।।