নতুনের খোঁজে-নতুন দিগন্তে
পয়ার
পরগণে খড়রিয়া দুর্গাপুর গ্রাম।
ভকত আনন্দ নামে অতি গুণধাম।।
রামায়ণ গানে যেন দ্বিতীয় বাল্মিকি।
পরম বৈষ্ণব তত্ত্বজ্ঞানী সদা সুখী।।
নমঃশূদ্র কুলজাত খ্যাতি সরকার।
প্রামাণিক মণ্ডল গাইন আখ্যা আর।।
কেহ কহে কীর্তনিয়া কেহ অধিকারী।
সর্ব গুণী সর্ব কার্যে সর্ব অধিকারী।।
কবিগানে বঙ্গ দেশে যশ চরাচর।
রচক গায়ক হেন পিক কণ্ঠস্বর।।
তস্য জ্যেষ্ঠ পুত্র হরিবর সরকার।
রূপার ম্যাডেলে খ্যাতি কবি গুণাকর।।
দ্বিতীয় ম্যাডেলে কবি রত্ন যশাখ্যান।
কনক ম্যাডেলে খ্যাতি কবি চূড়ামণি।
তারকের শিষ্য পুত্র ভক্ত শিরোমণি।।
তস্য ভ্রাতুষ্পুত্র মনোহর সরকার।
কবি চূড়ামণি রৌপ্য ম্যাডেল যাহার।।
সোনার ম্যাডেলে কবি-চূড়ামণি খ্যাতি।
উপস্থিত বক্তা যেন দ্বিতীয় ভারতী।।
যশোগানে ধরাপূর্ণ কবি সরকার।
মনোহরানুজ জটাধর সরকার।।
রাঢ়দেশে আদি বাস মিশ্র বংশজাত।
বংশ অনুক্রমে ক্রমে বঙ্গ দেশাগত।।
শ্রীকাশীরাম চৌধুরী আদি কুলনাথ।
যার বংশাবলী ভবে হয় অগণিত।।
কাশীরাম সুত যাদুরাম সে নৈষ্ঠিক।
তস্য পুত্র চাঁদ, তিতুরাম প্রামাণিক।।
যবে রাজা সীতারাম ছিল নরপতি।
গ্রাম শ্রেষ্ঠ বলে দেয় প্রামাণিক খ্যাতি।।
তিতুরাম পুত্র নাম শ্রীরামজীবন।
মুনিরাম প্রামাণিক তাহার নন্দন।।
তস্য বংশধর শান্তিরাম প্রামাণিক।
কৃষ্ণমন্ত্রী হরিভক্ত পরম নৈষ্ঠিক।।
তস্য পুত্র রাম দাস শ্যামদাস আর।
রামদাস বংশধর দুইটি কুমার।।
জ্যেষ্ঠ শ্রীগোঁসাইদাস নাম সুপ্রচার।
কনিষ্ঠ মধুসূদন দুইটি কুমার।।
গোঁসাইদাসের পুত্র শ্রীআনন্দ জ্যেষ্ঠ।
হীরামন নাগর বনমালী কনিষ্ঠ।।
হরিবর রঘুনন্দন যশোদা নন্দন।
শ্রীযদুনন্দন চারি আনন্দ নন্দন।।
হরিবরের তনয় শ্রীকৃষ্ণপ্রসাদ।
আনন্দে আনন্দ চিন্তা করে হরিপদ।।
হরিবর মনোহর কবি দুটি ভাই।
উভয়ের গুরু হন তারক গোঁসাই।।
মনোহর এক পুত্র করিয়াছে লাভ।
তারকের বরপুত্র শ্রীবেণীমাধব।।
মধুসূদনের হ’ল এ তিন কুমার।
নীলমণি অক্রুর তৃতীয় বিশ্বম্ভর।।
নীলমণি পুত্র সে বরদাকান্ত নাম।
কবিগানে বিশারদ অতি গুণধাম।।
উমেশ নামেতে হীরামনের নন্দন।
তস্য পুত্র কমলাক্ষ সতীশ দু’জন।।
ওঢ়াকাঁদি হরিচাঁদে জগন্নাথ মানে।
তেতুলের গোলা খায় ব্যাধির বিধানে।।
ওঢ়াকাঁদি প্রেম বন্যা উঠিল তুফান।
পঞ্চকাঁটা ভেঙ্গে চুরে ধায় প্রেমবান।।
ব্রাহ্মণ কায়স্থ শূদ্র বৈরাগী যাহারা।
পবিত্র কৌপীন ছিণ্ডে ভক্ত হ’ল তা’রা।।
হাতিখাদা গ্রাম বাসী তিলক বণিক।
নারী সহ মাতোয়ারা পরম নৈষ্ঠিক।।
মল্লকাঁদি রামতনু শিরালী ছিলেন।
ওঢ়াকাঁদি গিয়ে পুত্র প্রাপ্ত হইলেন।।
মহাপ্রভু হরিচাঁদ দিয়াছিল বর।
প্রাচীন বয়সে দোঁহে পাইল কুমার।।
রামতনু শিরালীর পুত্র হ’ল কর্ণ।
দীননাথ পুত্র তিলকের বাঞ্ছা পূর্ণ।।
অপুত্রক আনন্দ অন্তরে দুঃখ পায়।
পুত্রের কামনা করি ওঢ়াকাঁদি যায়।।
পথে এক ম্লেচ্ছ বলে যেতেছ কোথায়।
আনন্দ বলিল যাব ওঢ়াকাঁদি গায়।।
ম্লেচ্ছ শুনে তুচ্ছ করে বলে গালি পাড়ি।
খেতে নাহি দেয় শালা যাও তার বাড়ী।
ওঢ়াকাঁদি গেলে ডেকে বলে ভগবান।
পথে লোকে শালা বলে তুই এলি কেন।।
তাহা শুনি আনন্দ লুটিয়া পড়ে পায়।
পয়ার প্রবন্ধে কবি তারক রচয়।।