নতুনের খোঁজে-নতুন দিগন্তে
অত্র শ্রীশ্রীহরি-লীলামৃত গ্রন্থে মহাপ্রভুর লীলা কথঞ্চিৎ মাত্র প্রকাশিত হইল। মহাপ্রভুর লীলা-গীতি গ্রন্থিত করিতে, অনেকানেক রচিয়তা, উৎসাহ সহকারে চেষ্টিত আছেন। আমি বোধ করি, প্রভুর আজীবন লীলার কলাংশ মাত্রও এই গ্রন্থে প্রকাশিত হইল না। তাঁহার লীলা কাহিনী বর্তমানতঃ কোথায়ও লিপিবদ্ধ নাই। কিন্তু তাহার আনুষঙ্গ ভক্ত বা প্রাচীনতম ব্যক্তি বা তাহাদের বংশধর গণের প্রমুখাৎ যাহা শ্রুত হওয়া যায়; তাহা সংগ্রহ করিতে পারিলে, এইরূপ অনেকানেক গ্রন্থ হইতে পারে। তাঁহার প্রেমার্ণবের মহাবন্যার অনন্তঢেউ, অদ্যাপিও পূর্ববঙ্গের দ্বারে দ্বারে তরঙ্গায়িত হইতেছে। কত রোগী, কত পাপী, কত-অন্ধ প্রভৃতি নর-নারীকে যে, জাতি বর্ণ নির্বিশেষে, তিনি এক ভক্তি পথে আনয়ন করিয়াছেন, এবং তাহার বর্তমান ভক্তগণ এখনও আনিতেছেন, তাহার ইয়ত্তা নাই। তাঁর এক একজন ভক্তচরিত্র লিপিবদ্ধ করিলে, ক্রিয়াগুণ দ্বারা ভগবানের অবতার বলে, অনুভব করিতে হয়। গোস্বামী গোলোক, স্বামী মহানন্দ, গোস্বামী লোচন, পাগল হীরামন, পাগল ব্রজনাথ, প্রভুর আনুষঙ্গ রাখাল, নাটু ও বিশ্বনাথ, প্রভৃতির ক্রিয়াকলাপ, অতি আশ্চর্য ও শ্রুতি মধুর।
গ্রন্থ প্রণেতা কবি-রসরাজ মহাশয়ের জীবনী মুদ্রাঙ্কণ বহুব্যয় সাধ্য, সুতরাং এইসঙ্গে দেওয়া হইল না। আশাকরি মহাপ্রভুর ইচ্ছায় ভবিষ্যতে মুদ্রি হইতে পারে।
পরন্ত--- পাঠক এবং শ্রোতৃ-মণ্ডলীর নিকট আমার সানুনয় নিবেদন এই; অত্র গ্রন্থ তারক চন্দ্র কবি রসরাজ মহাশয়, এই গ্রন্থ একাদিক্রমে রচনা করিয়া গিয়াছেন, অতঃপর আমি আদিষ্ট হইয়া এই গ্রন্থকে আদি-মধ্য-অন্ত, ও পরিশিষ্ট, এই চারিখণ্ডে বিভক্ত করিয়াছি। এবং আদ্দি-খণ্ডে সপ্ত-তরঙ্গ, মধ্য-খণ্ডে সপ্ত-তরঙ্গ, অন্ত-খণ্ডে ষষ্ঠ-তরঙ্গ এবং পরিশিষ্ট খণ্ডে তরঙ্গ-ত্রয় দ্বারা অত্র গ্রন্থকে ত্রয়োবিংশতি তরঙ্গে খণ্ড খণ্ড করিয়াছি। এবং যে মহাত্বার যে, যে, ক্রিয়াকলাপ তাঁহার “শীর্ষ-পদ” এবং “শেষপদ” যাহাকে সাধারণ ভাষায় ভণিতা বলিয়া থাকে, তাহা কবি-রসরাজ মহাশয়ের নাম সঙ্কলিত করিয়া আমি শেষ করিয়াছি। ইহাতে যে, বাক্-চাপল্য এবং শ্রুতি-কটু-দোষ পড়িয়াছে, তাহা, এবং মৎ-কর্তৃক “প্রুফ” দেখায় গ্রন্থের যে, যে, অংশ বর্ণাশুদ্ধি এবং ভ্রান্তি-মূলক যে, যে, বর্ণ যেখানে রহিয়াছে, তাহা আপনাদের, ক্ষমা, সহৃদয়তা, এবং বদান্যতা গুণে আমাকে মাপ করিবেন।
নিবেদক
শ্রীহরিবর সরকার।